সীতাকুণ্ড সম্বন্ধে কিছু তথ্য
সীতাকুণ্ড
· আয়তন
সীতাকুণ্ড উপজেলার আয়তন ২৭৩.৪৭ বর্গ কিলোমিটার।
· জনসংখ্যার উপাত্ত
২০১১ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী সীতাকুণ্ড উপজেলার জনসংখ্যা ৩,৩৫,১৭৮ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১,৮২,২২৩ জন এবং মহিলা ১,৫২,৯৫৫ জন। এ উপজেলার ৮৬% লোক মুসলিম, ১৩% হিন্দু ও ১% অন্যান্য ধর্মাবলম্বী রয়েছে
· অবস্থান ও সীমানা
চট্টগ্রাম মহানগরীর ৩৭ কিলোমিটার উত্তরে[2] ২২°২২´ থেকে ২২°৪২´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯১°৩৪´ থেকে ৯১°৪৮´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ জুড়ে এ উপজেলার অবস্থান।[1] এর উত্তরে মীরসরাই উপজেলা; পূর্বে ফটিকছড়ি উপজেলা, হাটহাজারী উপজেলা ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের বায়েজিদ বোস্তামী থানা; দক্ষিণে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের আকবর শাহ থানা ও পাহাড়তলী থানা এবং পশ্চিমে সন্দ্বীপ চ্যানেল ও সন্দ্বীপ উপজেলা অবস্থিত।
প্রশাসনিক এলাকা
সীতাকুণ্ড থানা গঠিত হয় ১৯৭৯ সালে এবং থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৩ সালে।
সীতাকুণ্ড উপজেলায় বর্তমানে ১টি পৌরসভা ও ৯টি ইউনিয়ন রয়েছে। এ উপজেলার সলিমপুর ইউনিয়নের
কিছু অংশ চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের আকবর শাহ থানার আওতাধীন। সলিমপুর ইউনিয়নের
বাকি অংশ ও সীতাকুণ্ড পৌরসভাসহ এ উপজেলার অন্যান্য সকল ইউনিয়ন সীতাকুণ্ড মডেল থানার আওতাধীন।
· নামকরণ
প্রাচীন ধর্মগ্রন্থ ও ইতিহাস ঘাঁটলে জানা যায়, প্রাচীন কালে এখানে মহামুণি ভার্গব বসবাস করতেন। অযোদ্ধার রাজা দশরথের পুত্র রামচন্দ্র তাঁর বনবাসের সময় এখানে এসেছিলেন। মহামুণি ভার্গব তাঁরা আসবেন জানতে পেরে তাঁদের স্নানের জন্য তিনটি কুণ্ড সৃষ্টি করেন এবং রামচন্দ্রের এখানে ভ্রমণ কালে তাঁর স্ত্রী সীতা এই কুণ্ডে স্নান করেন। এই কারণেই এখানকার নাম 'সীতাকুণ্ড' বলে অনেকের ধারণা।
· ইতিহাস
প্রাচীন নব্যপ্রস্তর যুগে সীতাকুণ্ডে মানুষের বসবাস শুরু হয় বলে ধারণা করা হয়। এখান থেকে আবিষ্কৃত প্রস্তর যুগের আসামিয় জনগোষ্ঠীর হাতিয়ার গুলো তারই স্বাক্ষর বহন করে। ইতিহাস থেকে যতটুকু জানা যায়, ৬ষ্ঠ ও ৭ম শতাব্দীতে সম্পূর্ণ চট্টগ্রাম অঞ্চল আরাকান রাজ্যের অধীনে ছিল। এর পরের শতাব্দীতে এই অঞ্চলের শাসনভার চলে যায় পাল সম্রাট ধর্মপাল এর হাতে (৭৭০-৮১০ খ্রিস্টাব্দ)। সোনারগাঁও এর সুলতান ফখরুদ্দীন মুবারক শাহ্ (১৩৩৮-১৩৪৯ খ্রিস্টাব্দ) ১৩৪০ খ্রিস্টাব্দে এ অঞ্চল অধিগ্রহন করেন। পরবর্তীতে ১৫৩৮ খ্রিস্টাব্দে সুর বংশের শের শাহ্ সুরির নিকট বাংলার সুলতানি বংশের শেষ সুলতান সুলতান গিয়াস উদ্দীন মুহাম্মদ শাহ্ পরাজিত হলে এই এলাকা আরাকান রাজ্যের হাতে চলে যায় এবং আরাকানীদের বংশধররা এই অঞ্চল শাসন করতে থাকেন। পরবর্তীতে পর্তুগীজরাও আরাকানীদের শাসনকাজে ভাগ বসায় এবং ১৫৩৮ থেকে ১৬৬৬ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত এই অঞ্চল পর্তুগীজ ও আরাকানী বংশধররা একসাথে শাসন করে। প্রায় ১২৮ বছরের রাজত্ব শেষে ১৬৬৬ খ্রিস্টাব্দে মোগল সেনাপতি বুজর্গ উম্মেদ খান আরাকানীদের এবং পর্তুগীজদের হটিয়ে এই অঞ্চল দখল করে নেন।
পলাশীর প্রান্তরে নবাব সিরাজউদ্দৌলার পরাজয়ের পর এই এলাকাটিও ইংরেজদের দখলে চলে যায়। পরবর্তীতে ১৯০৮ সালে স্বদেশী আন্দোলনের সময় এই অঞ্চলের কর্তৃত্ব স্বদেশীদের হাতে আসে। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় এই এলাকাটি ২ নম্বর সেক্টরের অন্তর্ভুক্ত ছিল।
· শিক্ষা ব্যবস্থা
সীতাকুণ্ড উপজেলার শিক্ষিতের হার ৫৪.৬০%।এ উপজেলায় ১টি বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়, ৬টি কলেজ, ১৫টি মাদ্রাসা, ৩০টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ৮২টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১০টি স্যাটেলাইট স্কুল, ৮টি কমিউনিটি বিদ্যালয় ও ২১টি কিন্ডারগার্টেন রয়েছে।
যোগাযোগ ব্যবস্থা
সীতাকুণ্ড উপজেলায় যোগাযোগের প্রধান সড়ক ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক। এছাড়া রয়েছে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথ। এ উপজেলায় সর্বমোট ১১২ কিলোমিটার পাকারাস্তা, ২৫৬ কিলোমিটার কাঁচারাস্তা, ৩৭ কিলোমিটার রেলপথ ও ৬টি রেলস্টেশন রয়েছে।সব ধরণের যানবাহনে যোগাযোগ করা যায়।
ভূগোল ও
জলবায়ু
সীতাকুণ্ড উপজেলা ২৮৩.৭৪ বর্গ কিলোমিটার বা ১০৫.৫৯ বর্গ মাইল এলাকা জুড়ে বিস্তৃত, যার মধ্যে বনাঞ্চল রয়েছে ৬১.৬১ বর্গ কিলোমিটার বা ২৩.৭৯ বর্গ মাইল । [সীতাকুণ্ড উপজেলার পশ্চিমাংশ জুড়ে বঙ্গোপসাগর। এ উপজেলায়
বহমান কোন নদী নেই।
দর্শনীয় স্থান
- চন্দ্রনাথ মন্দির
- ব্যাসকুণ্ড (সীতাকুন্ড সদর)
- বার আউলিয়া দরগাহ শরীফ (সোনাইছড়ি)
- হারমদিয়া জামে মসজিদ (কুমিরা)
- বিস্তীর্ণ সমুদ্র সৈকত
- উপকূলীয় বনাঞ্চল
- চন্দ্রনাথ মন্দির ও পাহাড়
- ইকোপার্ক ও বোটানিক্যাল গার্ডেন
- ইত্যাদি
information collect wikipidia
More information share & like our page


Comments
Post a Comment
stay with us